গভীর বঙ্গোপসাগরে ধরা পড়লো বিরল প্রজাতির `টিয়া’ মাছ
সাগরকন্যা পটুয়াখালীর কুয়াকাটাসংলগ্ন গভীর বঙ্গোপসাগরে ধরা পড়লো বিরল প্রজাতির একটি ‘টিয়া’ মাছ। গেল ২৬ আগস্ট সকালে জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের এফবি মায়ের দোয়া নামক ট্রলারের মনির মাঝি নামে এক জেলের জালে এ মাছটি ধরা পড়ে এবং পরদিন ২৭ আগস্ট বিকেলে কুয়াকাটার মহিপুর মৎস্য বন্দরের মৎস্য আড়তে এ মাছটি আনা হয়। বিরল প্রজাতির এ টিয়া মাছটি দেখার জন্য মৎস্য বন্দরের টিমন আড়তে ভিড় করে স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেরা। পরে বিরল প্রজাতির এ মাছটি বিশিষ্ট মৎস্য ব্যবসায়ী ও কলাপাড়া পৌর শহর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি দিদার উদ্দিন আহমেদ মাসুমকে উপহার দেয় ওই জেলে।
জেলেরা জানায়, এ মাছটির নাম ‘টিয়া মাছ’। গত ২৬ আগস্ট সকালে মনির মাঝি নামে এক জেলের জালে বিরল প্রজাতির এ মাছটি ধরা পড়ে। এ ধরনের মাছ সমুদ্রে খুব একটা দেখা যায় না। মাছের মুখের দিক গোলাকৃতির। মাছটি দেখতে টিয়া পাখির মতো। এর ওজন মাত্র দুই কেজি এবং এ মাছের আইসগুলো খুব মোটা।
ট্রলারের জেলে মনির মাঝি বলেন, ইলিশ মাছ ধরার জন্য গভীর সমুদ্রে জাল ফেলি এবং পরে জাল যখন উঠানো হয়, তখন ইলিশ মাছের সঙ্গে এ মাছটিও ওঠে আসে। ২৭ আগস্ট বিকেলে মহিপুর মৎস্য বন্দরের টিমন মৎস্য আড়তে গেলে আড়তের মালিক এ মাছটি দেখে কিনতে চায়। আমরা সব সময় এ আড়তেই মাছ বিক্রি করি। যার কারণে আমি আড়তের মালিকের কাছ থেকে এ মাছের জন্য কোনও টাকা নেইনি। তাকে উপহার হিসেবে মাছটি দিয়েছি।
টিমন মৎস্য আড়তের মালিক দিদারউদ্দিন আহমেদ মাসুম বলেন, ‘বিরল প্রজাতির এ মাছ দেখার পর জেলে মনিরের কাছ থেকে মাছটি কিনে নিতে চাই। কিন্তু জেলে মনির মাছটির দাম না নিয়ে আমাকে উপহার হিসেবে দেয়। মাছটি পাওয়ার পর আড়তে বরফ দিয়ে রাখি। গতকাল শুক্রবার বিকেলে বরফ থেকে বের করে মাছটি খাওয়ার জন্য কলাপাড়ার বাসায় নিয়ে যাই। মাছটি উপহার পেলেও একা খেতে পারিনি। তিনজন ঘনিষ্ট বন্ধু মাছের খবর জেনে যাওয়ায় তাদেরকেও রান্না করে মাছ পাঠাতে হয়েছে। মাছটি খেতে খুবই সুস্বাধু লেগেছে।’
বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের সাসটেইনাবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক মো. কামরুল ইসলাম জানান, এ ধরনের বিরল প্রজাতির মাছ ভারত মহাসাগরে বেশিরভাগ পাওয়া যায়। তবে বিভিন্ন উপকূলে এ মাছের বিচরণ দেখা যায়। এ প্রজাতির মাছ পাথুরে আবরণ থেকে শ্যাওলা খেতে অভ্যস্ত। শ্যাওলার সঙ্গে ক্যালসিয়াম খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করায় আইস খুব মজবুত ও পুরু হয়। এ মাছ সাধারণত সংখ্যাগরিষ্টতার ক্ষেত্রে ১২ থেকে ২০ ইঞ্চি দৈর্ঘের হয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এক দশমিক ৩ মিটার বা ৪ ফুট ৩ ইঞ্চি দৈর্ঘের হয়ে থাকে। আহরিত প্রজাতির মাছের দেহে তোতা পাখির ন্যায় নীল ডোরা কাটা দাগ বিদ্যমান এবং লেজের মাঝখানে উজ্জ্বল সোনালি-হলুদ রং দেখা যায়।
জেবি
মন্তব্য করুন